May 20, 2024, 8:17 am

সংবাদ শিরোনাম
শাহপরাণ (রহঃ) থানা পুলিশের অভিযানে ১৯,৬০০ কেজি ভারতীয় চিনিসহ ০৩ জন গ্রেফতার উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে অভিযানে ৪ আরসা সদস্য অস্ত্রসহ গ্রেফতার রাজধানীর ডেমরা এলাকা হতে আনুমানিক ছয় কোটি টাকা মূল্যমানের ৮৬০০ লিটার বিদেশী মদসহ ০৩ জন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ উলিপু‌রে পাঁচ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক কাউনিয়ায় (ব্লাস্ট) এর উদ্দোগে ধর্মীয় সম্প্রীতির উপরে আলোচনা সভা কুড়িগ্রামে ১ টাকায় ১০ টি পরিবেশ বান্ধব পাখা বিক্রি করছে ফুল জৈন্তাপুরে গভীর রাতে পুলিশের অভিযানে ৬১৫ বোতল মদ ৮ কেজী গাঁজা উদ্ধার রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ০৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ ক্ষেতলালে কলেজ প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যু বার্ষিকীতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে সার্কেল হিসেবে সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ রানার যোগদান

মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারী শিপনের বিরুদ্ধে স্ত্রী- সন্তান ও এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগ

মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারী শিপনের বিরুদ্ধে স্ত্রী- সন্তান ও এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগ
এহিয়া আহমেদ নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) থেকে


একটি ছেলের জীবন নষ্ট করে দিল মাদক! মাদকাসক্ত হয়ে ৪ বছরের কন্যাসন্তান সহ স্ত্রী-কে তালাক। নানার বাড়ির গাছ-পালা, পুকুরের মাছ, ও ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মোবাইল, স্বর্ণ, রূপা হাতে নিয়ে তার স্ত্রীকে দেখানোর কথা বলে চম্পট দেয়। পরে ঐ সব অন্যত্র বিক্রয় করে সিএনজি ও অট্রোরিক্সা নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে গিয়ে ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ ও গাজাঁসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য ক্রয় করে সেবনের পর যে অট্রোরিক্সা বা সিএনজি যোগে যাওয়া আসা করতো তাদের ভাড়া না দিয়ে মারধর করে চালকের কাছ থেকে তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও টাকা পয়সা নিয়ে বিদায় করে দেয়। এসবের প্রতিবাদ যে ই করে তার উপর হামলা ও মামলা করে। এক পর্যায়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকে প্রকাশ্যে মাথা ফাটিয়ে গুরুত্বর আহত করে হাসপাতাল পাঠায়। এবং জনৈক আরো অনেকেরই উপর হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবেশেষে স্থানীয় চেয়ারম্যান- মেম্বার, আত্মীয়-স্বজন এমন আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবরে গণস্বাক্ষর করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানাযায়, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার ১০নং দেবপাড়া ইউনিয়নের জালালসাপ গ্রামের নুরুল হোসেন নিলু প্রায় ৩৬ বছর পূর্বে বিয়ে করেন, আউশকান্দি ইউনিয়রে উত্তর দৌলতপুর গ্রামের আমেরিকা প্রবাসী লাল (মুন্সি) মিয়া কন্যা তাহমিনা বেগম-কে। বিয়ের এক বছর পর তাদের একটি পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। তার নাম দেওয়া হয় মোবারক হোসেন শিপন। সন্তান জন্মের ২ মাস পর তার মা তাহমিনা বেগম ঐ সন্তানকে নিয়ে তার বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এবং এখানেই শিপনের লালন পালন করাকালে ২ বছরের মাতায় শিপনের মা মারা যান। এরপর তার নানা-নানী তাকে লালন পালনসহ তার বরণ পোষণ করতে থাকেন। একপর্যায়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য নানা-নানী ও খালা সাইপাস পাঠান। সেখানে প্রায় বছর খানেক থাকার পর সে মাদক সেবনে জড়িয়ে পরে। কোনো একদিন পুলিশ মাতাল অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। অনেক দিন হাজতবাস করে বাংলাদেশে ফেরত আসে। দেশে আসার পর শিপনের আত্মীয়- স্বজন তাকে বিয়ে করান পাশ্ববর্তী ৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নের ফাদুল্লাহ গ্রামের সমসুর নুর এর কন্যা রিপা আক্তারকে। তাদের দাম্পত্ত জীবনে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়, বিয়ের পর পর শিপন তার স্ত্রীর সাথে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ করতো। এমনকি তার স্ত্রীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তার স্ত্রীকে রক্ষা করতেন। প্রতিদিনই সে মাদকাসক্ত হয়ে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করে বাজারে গিয়েও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট ও দোকান মালিকদের সাথে অশুভ আচরন করে। এ নিয়ে শিপনের নানার বাড়ির লোকজনের কাছে বিচার দিলে তারা শিপনকে কিছু জিজ্ঞাস করলেই তাদের উপর চলে হামলা ও মামলা। এসব এর ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলে কথা বলতে সাহস পান না। এক পর্যায়ে মাদকের টাকার জন্য তার স্ত্রীকে প্রচন্ড চাপ দেয় এবং মারধর করে। রাতে বালিশের নিচে চুরি রেখে বলে, যদি আমার কথা রাখিস না তাহলে তাকে আজ জবাই করে ফেলব। এমন কথা শুনে খুব কৌশলে তার স্ত্রী ঐ কন্যা সন্তানকে নিয়ে ঘরের পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। শিপন তাকে ঘরে না পেয়ে সমাজে সবার কাছে প্রচার করতে থাকে তার স্ত্রী ঘরের সকল মালামাল ও টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে গেছে। এবং শিপনের আত্মীয় স্বজন ও স্থানীয় মুরুব্বিয়ান তার স্ত্রীকে বুঝিয়ে আবার তার শশুর বাড়ি থেকে আনেন। এর কিছুদিন পর তার স্ত্রীকে চাপ দেয় যৌতুকের জন্য! সে অপরগতা প্রকাশ করলে তাকে মারধর করে। স্বামীর অহেতুক জ্বালা যন্ত্রনা সইতে না পেরে তার বাবার বাড়ি চলে যায়। এর পর তাহমিনা তার বাবাকে নিয়ে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ২০১৬ সালের ১৩ই অক্টোবর তারিখ মামলা করে। এ মামলার খবর পেয়ে মামলার থেকে রক্ষা পেতে ৫ দিন পর শিপন হবিগঞ্জ নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে ১৮ই অক্টোবর ২০১৬ইংরেজী তারিখে তার স্ত্রীকে তালাক দেয়।
এবং এর পূর্বে ১০ অক্টোবর ২০১৬ ইংরেজী তারিখে ৪জনকে আসামী করে হবিগঞ্জ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ০২ এ ৬৪৮/১৮ (নবী) মামালা দায়ের করে। উক্ত মামলা দায়ের পর তার তালাক প্রাপ্ত স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করে এবং বলে, আমি মামলা করেছি, তবে তদের কাউকে মামলায় আসামী দেই নাই। আমার এখন কেউ নাই, মা-বাবা, আত্মীয় স্বজনসহ সবাইকে হারিয়ে ফেলেছি। এখন তুই ও আমার মেয়ে ছাড়া আর কেউ নাই, আমাকে একটু আশ্রয় দে। এমন আকুতি মিনতির কথা শুনে স্ত্রীর মন গলে যায়। এক পর্যায়ে শিপন তার শশুর বাড়িতে অবস্থান করে। সেখানে প্রায় মাস খানেক থাকার পর তার স্ত্রীকে ম্যানেজ করে টাকার দেয়ার কথা বলে এবং সে তার নানীর জায়গা জমি বিক্রয় করে পরিশোধ করবে বলে কথা দেয়। একপর্যায়ে তার স্ত্রী একজনের কাছ থেকে ২০ হাজার ও আরেকজন মহিলার কাছ থেকে ৩০হাজার টাকা ২ মাসের কথা বলে ঋণ করে এনে দেন। ঐ টাকা পাওয়ার পর সেখান থেকে কলেকৌশলে তার স্ত্রীকে বেড়ানোর কথা বলে গত ৪ জুলাই ২০১৮ইংরেজী দুপুরে সিএনজি যোগে বাড়ি থেকে বের হয়ে সৈয়দপুর বাজারে আসা মাত্রই শিপন তার স্ত্রীকে সিএসজিতে প্রাণে হত্যার উদ্দ্যেশে গলা টিপে ধরে। তার স্ত্রী ও সন্তানের চিৎকারে সৈয়দপুর বাজার আশপাশের লোকজন, ব্যবসায়ী ও সিএনজি ড্রাইভাররা এগিয়ে এসে শিপনের হাত থেকে তাদের রক্ষা করেন। এর পর সেখান থেকে শিপন কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে তার নানার বাড়িতে আবার এসে বাড়ির বড় বড় বিভিন্ন ধরনের গাছ পালা, পুকুরের মাছ ও তার নানীর জমি বিক্রি করে মাদক সেবন করতে থাকে। এক পর্যায়ে ঐ টাকা পয়স শেষ হয়ে গেলে ঐ গ্রামের লোকজন, আউশকান্দি বাজারের বিভিন্ন দোকানপাট ও আত্মীয়- স্বজনদের সাথে প্রায়ই ঝগড়া বিবাধে লিপ্ত থাকে। তার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে নানা-নানী, খালা আমেরিকা চলে যান এবং টাকা পয়সা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এ পর্যায়ে নেশার টাকা না পেয়ে রিক্সার ডাইভার ও সিএনজি ড্রাইভার দের নিয়ে যায় মাদকের স্পটে যায়। এবং মাদক সেবনের পর তাদেরকে মারধর করে তাদের মোবাইল ও নগদ টাকা পয়সা নিয়ে যায়। এ নিয়ে ভুক্তভোগিরা অনেকেরই কাছে বিচার প্রার্থী হন। কিন্তু কেউ কোন সুরাহা করতে পারেনি। এ ব্যাপারে স্থাণীয় ইউপি সদস্য কথা বললে তাকে হেনস্থা করে।
অবশেষে গত আগষ্ট মাসের ১০ তারিখ বুধবার রাত ৮টার সময় আউশকান্দি বাজার থেকে দেবপাড়া ইউনিয়নের সিট ফরিদপুর গ্রামের মৃত আব্দুর নুর এর পুত্র আবুল মিয়ার রিক্সায় গোপলার বাজার ষ্টেন্ডে যায়। সেখান থেকে একটি টং থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট ক্রয় করে। সেখান থেকে আসার পথে উলুকান্দি মুচি বাড়ির নিকট রিক্সা থেকে নেমে ঐ রিক্সা চালককে বেধরক মারপিট করে তার কাছ থেকে নগদ ২হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন রেখে দেয়। রিক্সা চালক আবুল মিয়া বাজারে তার মামা উত্তর দৌলতপুর গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা জয়নাল আবেদীন এর কাছে বিচার দেন। এতে তিনি তাকে শান্তনা দিয়ে বলেন, আমি তাকে খুজে বের করে তুমার টাকা ও মোবাইল দেব। এক পর্যায়ে ঐদিন রাত ৯টার দিয়ে রূপালী ব্যাংকের সামনে শিপন আড্ডা দিতে দেখতে পান জয়নাল আবেদীন। এতে তিনি শিপনের সাথে কথা বলেন, যে রিক্সার চালকের কাছ থেকে কেন টাকা ও মোবাইল ফোন আনলে? সে আমার কাছে বিচার দিয়েছে। তুই যদি এনে থাকিস তাহলে দিয়ে দে। এ কথা বলা মাত্রই তার হাতে থাকা মেগ লাইট দিয়ে তার মামা জয়নাল আবেদীনের মাতায় কয়েকটি আঘাত করে। এতে তিনি মাটিতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এবং তিনি কিছুটা সুস্থ্য বাড়িতে আসলে এলাকাবাসীকে এ বিষয়টি অবগত করেন। এবং এলাকাবাসী ও চেয়ারম্যান- মেম্বার গণ স্বাক্ষর করে গত ২০ আগষ্ট ২০১৮ইংরেজী তারিখে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর সদয় অনুলিপি প্রেরন করেন, নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নবীগঞ্জ, চেয়ারম্যান আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ।
এ ব্যাপারে দেশ ও এলাকার যুব সমাজকে রক্ষা করতে হলে মোবারক হোসেন শিপনকে আইনের আওতায় আনলে পাওয়া যাবে মাদকের বিশাল গডফাদারদের তালিকা। তাই প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার  হস্তক্ষেপ কামনা করছেন আউশকান্দিসহ নবীগঞ্জের সচেতন নাগরিক সমাজ।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর